আমি তানভীর, দীর্ঘ দশ বছর ধরে কানাডার টরন্টো শহরে বসবাস করছি। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিলো একদিন আমেরিকা ভ্রমণ করার। কখনো সুযোগ আসেনি, কখনো বা সময়ের অভাবে তা সম্ভব হয়নি। তবে, একদিন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে, আমি আমেরিকা ঘুরে আসবো।
আমার প্রথম গন্তব্য ছিল নিউ ইয়র্ক সিটি। কানাডা থেকে নিউ ইয়র্কে যাওয়ার জন্য আমি একটি বাসে উঠে পড়লাম। দীর্ঘ নয় ঘণ্টার যাত্রা শেষে, যখন বাসটি নিউ ইয়র্কে পৌঁছালো, তখন অনুভব করলাম যেন একটা নতুন জগতে প্রবেশ করেছি। শহরের বিশালতা, বাণিজ্যিক গুরুত্ব, এবং স্থাপত্যের সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছিল।
প্রথমেই আমি টাইমস স্কোয়ার গেলাম। এত বড় ও উজ্জ্বল বিজ্ঞাপনগুলি দেখলে মনে হয় যেন পুরো শহর এক বিশাল মঞ্চ হয়ে উঠেছে। হাজারো মানুষ সেখানে চলাফেরা করছে, কিছু কাজ করছে, কিছু মনোরঞ্জন উপভোগ করছে। আমি কয়েক ঘণ্টা এখানে কাটালাম, রাস্তার মাঝে হাঁটতে হাঁটতে অনুভব করলাম নিউ ইয়র্কের জীবনের গতি।
এরপর, আমি সেন্ট্রাল পার্কে গেলাম। নিউ ইয়র্কের এই সবুজ পরিসরে একটু শান্তির অনুভূতি পাওয়া যায়। বিভিন্ন মানুষ সেখানে হাঁটছে, দৌড়াচ্ছে, বা শুধু বসে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করছে। সেন্ট্রাল পার্কের গাছপালা, হ্রদ এবং সারি সারি পথ যেন প্রকৃতির এক অংশে পরিণত হয়েছে।
আমার পরবর্তী গন্তব্য ছিলওয়াশিংটন ডিসি। এখানে আসলে আমি সরাসরি ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারলাম। লিঙ্কন মেমোরিয়াল, কেপিটল হিল, এবং ন্যাশনাল মিউজিয়ামগুলি দেখে আমি চমৎকৃত। ডিসির ঐতিহাসিক গুরুত্ব, রাজনৈতিক কেন্দ্র, এবং সবার জন্য উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক স্থানগুলো আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।
ভ্রমণের শেষে, আমি নিউ ইয়র্ক ফিরেছিলাম। সে শহরের উৎসাহ, জীবনযাত্রার দিক থেকে এটি আমার মনের মধ্যে এক বিশেষ স্থান তৈরি করে রেখেছে। আমেরিকা এক ধরনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের মতো, যেখানে পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন সংস্কৃতি, জাতি, এবং জীবনযাত্রার মেলবন্ধন দেখা যায়।
ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমাকে নতুন করে চিন্তা করতে শিখিয়েছে, নিজেকে বুঝতে সাহায্য করেছে। এমন এক দেশ, যেখানে না শুধু স্বাধীনতা, বরং প্রত্যেক মানুষের স্বপ্ন পূরণের পথ খোলা। আমেরিকা ছিল আমার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়, যা কখনো ভুলবো না।