কানাডা ভৌগোলিক আয়তনে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হলেও, এর জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, কানাডার জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৫ লাখ (৪০.৫ মিলিয়ন)।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি
কানাডার জনসংখ্যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত এক বছরে জনসংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি বেড়েছে, যা ১৯৫৭ সালের পর সর্বোচ্চ বার্ষিক বৃদ্ধি।
অভিবাসন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি
কানাডার জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণ অভিবাসন। দেশটি প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে স্বাগত জানায়, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে প্রায় ১ লাখ অভিবাসী কানাডায় প্রবেশ করেছে, যা দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
জনসংখ্যার ঘনত্ব ও বিতরণ
কানাডার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৪ জন, যা বিশ্বের অন্যতম নিম্ন ঘনত্বের দেশগুলোর মধ্যে একটি। জনসংখ্যার একটি বড় অংশ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাস করে। বড় শহরগুলোর মধ্যে টরন্টো, মন্ট্রিয়াল এবং ভ্যাঙ্কুভার উল্লেখযোগ্য, যেখানে দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫% বাস করে।
ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য
কানাডা একটি বহুভাষিক ও বহুসাংস্কৃতিক দেশ। ইংরেজি ও ফরাসি দেশের দুটি সরকারি ভাষা। কুইবেক প্রদেশে প্রধানত ফরাসি ভাষাভাষী জনগণ বাস করে, যেখানে দেশের অন্যান্য অংশে ইংরেজি প্রধান ভাষা। এছাড়া, কানাডায় বিভিন্ন জাতিগত ও সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের উপস্থিতি দেশের বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
জনসংখ্যার বয়স বিন্যাস
কানাডার জনসংখ্যার গড় বয়স প্রায় ৪১ বছর। দেশটি একটি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক সেবার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস
অভিবাসন নীতির কারণে কানাডার জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সরকারকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
সার্বিকভাবে, কানাডার জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বৈচিত্র্য দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।