নয় দফা প্রস্তাবনা
বাংলাদেশ ডিপিও কোয়ালিশন কর্তৃক বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠির জন্য ৯ দফা ঐক্যবদ্ধ দাবি এবং কর্মসূচী প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব দাবি ও কর্মসূচী তাদের জীবনমান উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন এবং সামগ্রিক সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই দাবীসমূহ এবং কর্মসূচীগুলো নিম্নরূপ:
১. প্রতিবন্ধী ভাতা বৃদ্ধি: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকাংশই আর্থিকভাবে অসচ্ছল। তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা পরিমাণ বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। বিগত নির্বাচিত সরকার সমূহ প্রতিবন্ধীদের দাবী সমূহের প্রতি কোন কর্ণপাত করেনি। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে এই দাবি সমূহ প্রদান করা হচ্ছে।
২. গ্রাজুয়েশান শেষ করা প্রতিবন্ধী ছাত্রদের চাকরির ব্যবস্থা: প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার পর চাকরি না পাওয়ার সমস্যা অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে চাকরির সুযোগ তৈরি করা জরুরি, যাতে তারা তাদের অর্জিত শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারেন এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে পারেন। যাতে গ্রাজুয়েশান শেষ করা একজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের একজনও কোনভাবে যেন বেকার না থাকে।
৩. শিক্ষা অবৈতনিক করা: প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। তবে, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা অনেক সময় শিক্ষার ক্ষেত্রে আর্থিক বাধার মুখোমুখি হয়। তাই, শিক্ষাকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য পুরোপুরি অবৈতনিক করা উচিত, যাতে তারা সমান সুযোগ পায়।
৪. ব্যবসায়িক ঋণ দিয়ে উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা: প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ব্যবসায়িক ঋণ প্রদান করলে তারা তাদের পেশাগত জীবনে সফল হতে পারে। এটি তাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং আত্মনির্ভরশীলতার দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
৫. সিআরপিডি বাস্তবায়ন করা: সিআরপিডি ( ইউ এন কনভেশন ফর দ্য রাইটস অব পিপল উইথ ডিসএবিলিটিস) একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি যা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করে। বাংলাদেশে সিআরপিডি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি।
৬. সি এস আর ফান্ড পাওয়ার ব্যবস্থা করা: সিএসআর (কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি) ফান্ড থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা দরকার। এই ফান্ডের মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো সম্ভব।
৬ (খ). ফান্ডের বিকেন্দ্রিকরন: প্রতিবন্ধী জনগণের জন্য উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের বিষয়টি শুধু ঢাকা জেলার সংগঠনের সমূহের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ না রেখে দেশের সকল জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সঠিক সুযোগ পাবে এবং তাদের ক্ষমতায়ন বাড়বে।
৬ (গ). সকল জেলায় সবার কাছে অনুদান যাওয়ার ব্যবস্থা করা: অনুদান বা সহায়তা সঠিকভাবে প্রত্যেক জেলায় পৌঁছানো উচিত। স্থানীয় পর্যায়ে বিতরণের ব্যবস্থা থাকলে এটি প্রতিবন্ধী জনগণের মধ্যে সঠিকভাবে বিতরণ হবে।
৭. বৈদেশিক অনুদান প্রাপ্তির সক্ষমতা: সরকার ও বিভিন্ন এনজিওদের মাধ্যমে বৈদেশিক অনুদান সংগ্রহের উপায় তৈরির মাধ্যমে প্রতিবন্ধী জনগণের কল্যাণে অর্থের ব্যবস্থা করা সম্ভব। ডিপিও সংগঠন সমূহের জন্য ডিপিও সংগঠনগুলোর জন্য এনজিও নিবন্ধন ও অনুদান প্রক্রিয়া সহজ করা ।
৮. জাতীয় সংসদে নির্ধারিত সংখ্যাক সংরক্ষিত প্রতিবন্ধী আসন রাখার ব্যবস্থা করা।
৯. তথ্য প্রাপ্তির জন্য আলাদা পোর্টাল তৈরী করা। সরকারী অনুদান, প্রকল্প, বিজ্ঞপ্তি, টেন্ডার নোটিশ ইত্যাদি যার সাথে ডিপিও সমূহের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তা অডিও, ভিডিও (ইশারা ভাষা) ও লিখিত এই তিনটি ফরমেটে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে বা আলাদা পোর্টালে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।